গরম পড়তেই বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে জলকষ্ট।
কোথাও পাইপলাইনের এয়ার ভাল্ভ ফেটে বিপত্তি। কোথাও আবার পাইপলাইনে ফাটল। কিন্তু সেই ফাটল কোথায়, গত চার-পাঁচ দিন ধরে তা চিহ্নিত করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে কলকাতা পুরসভা। ফলে পানীয় জলে মিশে যাচ্ছে নোংরা জল। গরমে জলকষ্টের সমস্যা এ শহরে নতুন কিছু নয়। এ বারও তার ব্যতিক্রম হল না।
এন্টালির পামারবাজার ও বেলেঘাটার গুড়িপা়ড়া রোড-সহ একাধিক এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে। পানীয় জলে নোংরা মিশে যাওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। যদিও পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, জল সরবরাহে কোনও সমস্যা হয়নি। যেখানে যা সমস্যা হচ্ছে, তা মেরামতিও করে দেওয়া হচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে।
পুরসভা সূত্রের খবর, সোমবার রাতে পামারবাজার ডাকঘরের উল্টো দিকে রাস্তার নীচে থাকা পাইপলাইনের এয়ার ভাল্ভ ফেটে যায়। পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, একটি মোবাইল সংস্থার কেব্ল বসানোর কাজ চলছিল সেখানে। সেই কাজ করতে গিয়েই ওই এয়ার ভাল্ভ ফেটে যায়। তাতেই জল ফোয়ারার মতো বেরিয়ে রাস্তায় এসে পড়ে। স্থানীয়দের একাংশ জানাচ্ছেন, অনেক রাত পর্যন্ত জল বেরোতে থাকে। তার পরে পুরকর্মীরা এসে মেরামতির কাজ শুরু করেন। মঙ্গলবার এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘জলের খুব বেগ ছিল। ফোয়ারার মতো জল প্রায় এক মানুষ উঁচুতে উঠে যায়। অনেক ক্ষণ ধরে জল বেরোচ্ছিল। সারা রাস্তাতেও জল জমে যায়। পরে দেখি তা সারানোর কাজ চলছে।’’
পুর আধিকারিকদের একাংশ অবশ্য জানাচ্ছেন, ওই এয়ার ভাল্ভ ফাটার জন্য কোথাও জল সরবরাহে সমস্যা হয়নি। জরুরি ভিত্তিতে তা মেরামত করে দেওয়া হয়েছে। জল সরবরাহ দফতরের এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘একটা এয়ার ভাল্ভ শুধু ফেটে গিয়েছিল। তাতে জল সরবরাহে কোনও সমস্যা হয়নি।’’ আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, এয়ার ভাল্ভ ফেটে যাওয়ার ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটে। তা নিয়ম মাফিক সারাইও করে দেওয়া হয়।
৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের শিবতলার গুড়িপাড়া রোডেও জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে। সেখানকার বাসিন্দাদের দাবি, গত কয়েক দিন ধরেই নোংরা পানীয় জল আসছে। পাইপলাইনে ছিদ্র হওয়ার কারণেই ওই বিপত্তি। কিন্তু সেই ছিদ্র যে কোথায় হয়েছে, এখনও তা ধরতে পারছে না পুরসভা। এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, ‘‘জলের পাইপলাইন ফেটে গিয়েছে বলে শুনছি। সমানে নোংরা আসছে পানীয় জলের সঙ্গে। গত চার-পাঁচ দিন ধরেই তা সারানোর কাজ চলছে। কিন্তু এখনও তো ঠিক হয়নি।’’ আর এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘অন্য জায়গা থেকে জল আনতে হচ্ছে। এ জল খাওয়া যায় নাকি!’’ এ দিনও গুড়িপাড়া রোডে মেরামতির কাজ চলেছে।
পুর কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, এটাও রুটিন মেরামতির কাজ। অনেক সময়েই পাইপলাইনে ছিদ্র হয়। তা মেরামতিও করে দেয় পুরসভা। স্থানীয় কাউন্সিলর জীবন সাহার আবার দাবি, ‘‘এলাকায় জলের কোনও সমস্যাই নেই। জল সরবরাহের পরিকাঠামো যা, তাতে জলের সমস্যা হওয়ার কথাও নয়। এ বিষয়ে অহেতুক প্রশ্ন করে লাভ নেই।’’
Comments
Post a Comment