এদিন ফের ওপেনিং কম্বিনেশন পরিবর্তন নাইটদের। ক্রিস লিনের সঙ্গী হলেন সুনীল নারাইন। কিন্তু ফাটকা কী আর রোজ রোজ খাটে!
জুটি: রাসেল-রানার শাসনে হার দিল্লির। ছবি
সোমবার ইডেনে কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রতিপক্ষ কারা ছিল? যদি ভাবেন দিল্লি ডেয়ারডেভিলস, তাহলে আপনি ডাহা ফেল! আসল লড়াইটা তো ছিল কোনও এক গৌতম গম্ভীরের বিরুদ্ধে!
তা প্রাথমিকভাবে অন্তত সেই লড়াইতে নাইটদের জোড়া আইপিএল দেওয়া অধিনায়ককে ফিরতে হচ্ছে শূন্য হাতেই। তাঁর প্রিয় ইডেন থেকে। ফ্র্যাঞ্জাইজির দুনিয়া যে বড় নির্মম!
শুরুর চার ওভার দেখে অবশ্য সেই কথা মনে হয়নি। বরং কাটাছেঁড়া চলতে পারত দীনেশ কার্তিকের অধিনায়কত্ব নিয়ে। টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন গম্ভীর। এবং
শুরুর চার ওভার দেখে অবশ্য সেই কথা মনে হয়নি। বরং কাটাছেঁড়া চলতে পারত দীনেশ কার্তিকের অধিনায়কত্ব নিয়ে। টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন গম্ভীর। এবং
এদিন ফের ওপেনিং কম্বিনেশন পরিবর্তন নাইটদের। ক্রিস লিনের সঙ্গী হলেন সুনীল নারাইন। কিন্তু ফাটকা কী আর রোজ রোজ খাটে! বিশেষত যেখানে শর্ট বলের প্রতি তাঁর দুর্বলতার কথা সকলেই জেনে গিয়েছে। হলও ঠিক তাই। তিন নম্বর ওভারেই শর্ট বল সামলাতে না পেরে প্রথম স্লিপে ধরা পড়লেন তিনি। ঘাতক এক প্রাক্তন নাইট! ট্রেন্ট বোল্ট। যিনি চলতি আইপিএলের প্রথম মেডেন ওভারটা করলেন। উল্টোদিকে লিনও সুবিধা করে উঠতে পারছিলেন না। প্রথম চার ওভারে বোর্ডে দেখাচ্ছে মাত্র ১৯ রান।

সোমবার দুরন্ত বোলিং কুলদীপ ও নারিনের। ছবি- সুপ্রতিম চট্টোপাধ্যায়
এবং ম্যাচটা ঘুরল এরপরেই। সৌজন্যে গম্ভীরের একসময়ের ওপেনিং জুটি! রবিন উথাপ্পা। দিল্লি বোলিংকে পাল্টা আক্রমণ করে ১৯ বলে ৩৫ রান করে গেলেন। মারলেন তিনটি বিশাল ছক্কা। বড় রান করতে পারতেন। যদি না টাইমিংয়ে ভুলে উইকেট উপহার দিয়ে আসতেন। ২৯ বলে লিনের সংগ্রহ ৩১। ১১তম ওভারে প্রথম বল করতে এসে চতুর্থ বলেই তাঁকে ফেরালেন মহম্মদ শামি। অধিনায়ক কার্তিক শুরুটা ভাল করলেও তাঁর ইনিংস বেশিক্ষণ স্থায়ী হল না। এই জায়গা থেকে ম্যাচটা ধরলেন নীতিশ রানা ও আন্দ্রে রাসেল। দু’জনের জুটিতে ২২ বলে উঠল ৬১ রান। রানা থামলেন ১৯তম ওভারে। ৩০ বলে ৫৯ রান করে। বোর্ডে ১৯৩ রান। ১২ বলে ৪১ রানের ইনিংসে ৬টি ছক্কা হাঁকিয়ে ভয়ঙ্কর মেজাজে রাসেলও।
বিরতিতে বললেন, ‘‘ইউনিভার্সাল বস্ তো একজনই! ক্রিস গেল! দারুণ উইকেট। আমি খালি উপভোগ করছিলাম!’’ তাঁর সেই ‘উপভোগ’ করার ফলেই স্কোরবোর্ডে উঠল ২০০ রান। শেষ ওভারে ১ রানে ৩ উইকেট যাওয়া সত্ত্বেও। ৭ রানের মাথায় তাঁর ক্যাচ ফেলায় নিশ্চয় তখন হাত কামড়াচ্ছেন জেসন রয়!
এরপরেও আশঙ্কার চোরাস্রোত ছিল। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধেও ২০০ তুলে হারতে হয়েছিল! তবে সোমবার প্রথম থেকেই দিল্লি ব্যাটিংকে চেপে ধরেন নাইট বোলিং। তিন ওভার যেতে না যেতেই স্কোরবোর্ড দেখাচ্ছে ২৪/৩। ৮ রানে ফিরে গিয়েছেন প্রাক্তন নাইট অধিনায়কও। শিবম মাভির বলে। পাল্টা চেষ্টা করেছিলেন ঋষভ পন্থ (২৬ বলে ৪৩) ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (২২ বলে ৪৭)। দু’জনেই ফিরলেন কুলদীপ যাদবের স্পিনের ফাঁসে। ‘ম্যাড ম্যাক্স’ ফিরতেই ইডেনে গর্জনও শুরু! ‘কে কে আর... কে কে আর’! বোর্ডে তখন ১০.৫ ওভারে ১১৩/৬। নাইট সমর্থকরা বুঝে গিয়েছেন, জেতা সময়ের অপেক্ষা। হলও তাই। দিল্লি অল আউট ১২৯ রানে। ৭১ রানে জিতে ঘরের মাঠে দ্বিতীয় জয়ের স্বাদ পেল নাইটরা। শেষ ম্যাচের হারের যন্ত্রণা কাটিয়ে উঠে এল দু’নম্বরেও।
টস করতে যাওয়ার সময় গম্ভীর বলছিলেন, ‘‘ইডেনের দর্শক ভীষণ ‘লয়্যাল’।’’ প্রতিপক্ষ শিবিরে যতই প্রাক্তন নাইট অধিনায়ক থাকুন, ইডেনের দর্শক যে নাইটদের জন্যই গলা ফাটাবেন, তা তাঁর চেয়ে ভাল আর কে জানে! ফ্র্যা়ঞ্জাইজির দুনিয়া সত্যিই বড় নির্মম!
Comments
Post a Comment